NarayanganjToday

শিরোনাম

ফুটপাত দখল করেছে আইভী, মীরু সন্ত্রাসী নয় ভিকটিম : শাহ নিজাম


ফুটপাত দখল করেছে আইভী, মীরু সন্ত্রাসী নয় ভিকটিম : শাহ নিজাম

সাবেক ছাত্র নেতা বর্তমান সাংসদ শামীম ওসমানকে দেখেই রাজনীতিতে আসার উৎসাহ পেয়েছিলেন এবং তার হাতেই রাজনীতির হাতেখড়ি হয়েছিলো বর্তমান মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম। তখন তিনি ১০ম শ্রেণীয়র ছাত্র ছিলেন তখন সময়কালটা ছিলো ১৯৮৫ সাল। তখনই তিনি জেলা ছাত্রলীগের কনিষ্ঠতম একজন সদস্য হিসেবে রাজনীতিতে আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন। এর আগে নবম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত অবস্থায় তিনি নারায়ণগঞ্জে আসেন। এসেই তিনি শামীম ওসমানের মুখে বঙ্গবন্ধুর কথা শুনেন। এর আগেও শুনেছিলেন পরিবারের কাছ থেকে। তবে, উজ্জীবিত করেছিলেন শামীম ওসমান।

রাজনীতি যারা করেন তাদের অবসর বলে কিছু নেই বলেই মেন করেন শাহ নিজাম। তারপরও অবসর সময় পেলেই বসে যান খাতা কলম নিয়ে। লেখালেখির অভ্যাস থেকেই সুযোগ পেলেই টুকটাক গান লিখেন তিনি। ইতোমধ্যে তিনি ‘ধন্যি পিতার ধন্যি মেয়ে’ শিরোনামে একটি গানও লিখেছেন যা বেশ সমাদৃত হয়েছে। এছাড়াও অবসরে একমাত্র সন্তান যাওয়াদকে কিছুটা সময় দেওয়ার চেষ্টা করেন। যাওয়াদ এবার নবম শ্রেণীর ছাত্র। শাহ নিজামের ইচ্ছে তিনি একজন ভালো মানুষ হতে চান এবং ভালো মানুষ হওয়ার পরই যেন তিনি মৃত্যু বরণ করেন।

রাজনীতির পাশাপাশি কমিউনিটি পুলিশিং মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যুক্ত আছেন শাহ নিজাম। এছাড়াও আছেন মাদক বিরোধী সংগঠন, মানবাধিকর সংগঠনের সাথে। পাশাপাশি ‘লাইভ নারায়ণগঞ্জ’ নামে তার একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালও রয়েছে বলে জানান এই তরুণ রাজনীতিক। তার সাথে কথা বলেছেন নারায়ণগঞ্জ টুডে’র নিজস্ব প্রতিনিধি লিজা চৌধুরী। ভিডিও ধারণে ছিলেন আমাদের আরেক নিজস্ব প্রতিনিধি মিলন বিশ্বাস হৃদয়। তারা দুজন তুলেছেন শাহ নিজামের অতীত বর্তমানসহ রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত নানা দিক।

টুডে : কেমন আছেন?
শাহ নিজাম : ভালো-মন্দ মিলিয়েই আছি।

টুডে : আপনি মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, কিন্তু প্রায় সময়ই আপনাকে দলের সভাগুলোতে তেমন দেখা যায় না, এর কারণ কী?
শাহ নিজাম : দেখা যায় না এটা ঠিক না। জরুরি মিটিং বা জাতীয় প্রোগ্রাম যখন থাকে এবং দলের প্রেসিডেন্ট ও সাধারণ সম্পাদক জানায় তখন যাই। আর যখন মিটিংয়ের কথা জানানো হয় না তখন যাওয়া হয় না।

টুডে : মহানগর আওয়ামী লীগের অন্তর্ভূক্ত কমিটিগুলো গঠন না হওয়ার কারণ কী, কবে নাগাদ গঠন কার্যক্রম শুরু হতে পারে?
শাহ নিজাম : কমিটি গঠন না হওয়া দুঃখজনক। সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য কমিটি অত্যন্ত জরুরী। কিন্তু এখানে আমাদের ব্যর্থতা। তবে, কি কারণে, কেন কমিটি গঠন হচ্ছে এর সঠিক উত্তরটা দিতে পারবেন আমাদের সাধারণ সম্পাদক।

টুডে : সভাপতির সাথে আপনাদের একটা দূরত্ব লক্ষণীয়, এই দূরত্বটা কী মতানৈক্যের নাকি বিভাজন?
শাহ নিজাম : আসলে এটা দূরত্ব না। এখন যেমন দেখছেন তা ক’দিন আগেও ছিল না। এখন উনি দলের সভাপতি পাশাপাশি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। ব্যস্ত থাকেন তিনি। এমন আরও নানা কারণে আমাদের যোগাযোগটা একটু কম। তবে, কোনো দূরত্ব নেই বলে বিশ্বাস করি।

টুডে : নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে উত্তর-দক্ষিণ মেরু শব্দটি কীভাবে এলো?
শাহ নিজাম : নারায়ণগঞ্জে কিছু লোক যারা সুবিধাবাদী তারা আমাদের নেতা শামীম ওসমানের প্রতি ইর্ষান্বিত হয়ে এই বিভাজনটা সৃষ্ট করেছে। আর সেই সুবিধাবাদীরাই তাদের সুবিধার্থে উত্তর-দক্ষিণ মেরু শব্দটা ব্যবহার করে।

টুডে : মেয়র আইভী এবং সাংসদ শামীম ওসমানের দ্বন্দ্বটা কেন?
শাহ নিজাম : আসলে এটা দ্বন্দ্বের প্রশ্ন না। কেননা, শামীম ওসমান আর আইভী কখনই এক নয়। আইভী এবং শামীম ওসমানের রাজনৈতিক জীবন এক না। শামীম ওসমানের জন্ম হয়েছে আন্দোলন, অধিকার প্রতিষ্ঠা আর বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারিদের বিচার দাবির মধ্য দিয়ে। আর আইভী এসেছে তার বাবার পরিচয়ে যখন পৌরসভার নির্বাচন করেন তখন শামীম ওসমান কানাডায়। সেখান থেকে তার নির্দেশনায় আমরা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও আইভীর নির্বাচন করেছি, তাকে পাস করিয়েছি।

টুডে : একই দলে দুইটা গ্রুপ, এ কী সাংগঠনিক দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ?
শাহ নিজাম : এটা সাংগঠনিক দুর্বলতা নয়। এক ঘরে তো দুই ভাই থাকে। দূরত্বও থাকে। এটা থাকতেই পারে। মনের মিল অমিল বলেই মনে করি।

টুডে : নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগে আগের মত চেইন অব কমান্ড নেই, নেতৃত্বের দ্বন্দ্বের কারণেই কি এমন হচ্ছে?
শাহ নিজাম : চেইন অব কমান্ড নেই, কথাটা সম্পূর্ণ ভুল। তা যদি না থাকতো তবে, এখানে কিন্তু বিভেদ, দ্বন্দ্ব লেগেই থাকতো, কেউ কাউকে মানতো না। এখানে কিন্তু তা নেই। একটা কর্মসূচি হলে সবাই সেখানে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অংশ নিচ্ছে।

টুডে : নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগে সব থেকে ভালো সাংগঠনিক যোগ্যতা কার রয়েছে বলে মনে করেন?
শাহ নিজাম : আমাকে যদি বারেবারে এই প্রশ্নটা করা হয় তবে, অবশ্যই বলবো শামীম ওসমান।

টুডে : মেয়র আইভী নাকি শামীম ওসমান, কে বেশি জনপ্রিয়?
শাহ নিজাম : নির্বাচন দিয়ে জনপ্রিয়তা বিবেচনা করা যায় না। এই দেশে কিন্তু জামাত ইসলামির লোকও নির্বাচিত হয়েছিলো, মন্ত্রীও হয়েছিলো। এটা কিন্তু জনপ্রিয়তা না। নারায়ণগঞ্জে যদি কেউ সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী ব্যক্তি থেকে থাকেন সে হচ্ছেন শামীম ওসমান। তার ডাকে মুহূর্তের মধ্যে লক্ষ লোকের সমাবেশ হয়, আইভীর ডাকলে কিন্তু তা হয় না। তাহলে জনপ্রিয়তা কার বেশি?

টুডে : শামীম ওসমানের সব থেকে ভালো গুণ কী?
শাহ নিজাম : আমার পছন্দের মানুষ হচ্ছেন বাবা। এই বাবার পর আমি যদি কাউকে পছন্দ করে থাকি তিনি হচ্ছেন শামীম ওসমান। কারণ, তার সততা, চরিত্র, আদর্শ এবং উপদেশ আমাকে অনেক কিছুই শিখিয়েছে। তার কাছ থেকেই শিখেছি কীভাবে মুরুব্বীদের সম্মান করতে হয়। এগুলোই হচ্ছে তার ভালো গুণ।

টুডে : শামীম ওসমানের যে কোনো একটা মন্দ গুণের কথা বলুন
শাহ নিজাম : উনি একটু বেশি আবেগ প্রবণ। এটাই মনে করি মন্দ গুণ। এ ছাড়া আর কিছু দেখি না।

টুডে : ব্যক্তি শামীম ওসমান বেশি ভালো নাকি রাজনীতিক শামীম ওসমান?
শাহ নিজাম : দুই দিকেই ভালো শামীম ওসমান। সন্তান, স্বামী এবং একজন পিতা হিসেবে অত্যন্ত ভালো তিনি। আর রাজনীতিক হিসেবে অবশ্যই তিনি আপসহীন। কারো কাছে মাথা নত করতে শিখেননি। কারণ তার ভেতর বঙ্গবন্ধুর আদর্শ রয়েছে।

টুডে : অনেকে বলেন, আপনারা দল নয়, ব্যক্তি শামীম ওসমানের রাজনীতি করেন, কথাটা কতটুকু সত্য?
শাহ নিজাম :  আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাস করি, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলি। এসব গুণাবলিই ব্যক্তি শামীম ওসমানের মধ্যে বিদ্যমান। যদি কখনো দেখতাম তিনি এর পরিপন্থি তাহলে ব্যক্তি শামীম ওসমানের রাজনীতি করতাম না।

টুডে : ব্যক্তি হিসেবে আইভী কেমন?
শাহ নিজাম : উনার সাথে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। কখনো কথাও হয়নি। তাই এই ব্যপারে বলার মতো কিছু নাই।

টুডে : রাজনীতিক আইভী দলের জন্য কতটা নিবেদিত?
শাহ নিজাম : আমার ৩৫ বছরের রাজনীতিক জীবন। ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু বর্তমানে আওয়ামী লীগে আছি। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম করেছি কিন্তু কোনো সময়ই আইভীকে দেখি নাই। ২০০১ সালে যখন বিএনপির আক্রমন আর পুলিশের বন্দুকের নলের মুখে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করেছি, তখনও কিন্তু আইভীকে দেখি নাই।

টুডে : মেয়র হিসেবে আইভীকে কতটা সফল মনে করেন?
শাহ নিজাম : রাস্তা ঘাটের উন্নয়ণ দেখে যদি কেউ বলে মেয়র সফল, এতে আমি একমত হব না। রাস্তা-ঘাট যা করেছে তা তো চেয়ারম্যান, মেম্বাররা করেছে, আইভী একবার পৌরসভার চেয়ারম্যান, দুইবার সিটি করপোরেশনের মেয়র- সে কি করেছে? কিছুই করেনি। সিটি করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়ন, জাইকার সহযোগিতা থাকার পরও তিনি কিন্তু নারায়ণগঞ্জে একটা পার্ক, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, ভালো মানের একটা স্কুলও করতে পারেনি। আমি সাংবাদিকদের সবসময় বলি সত্যটা লিখেন। আপনারা হয়তো ভয় পান নয়তো কাউকে ম্যানেজ করে চলেন। আজকে হকার নিয়ে কথা হচ্ছে। আমিতো বলবো ফুটপাত দখল করেছে আইভী। সে ফুটপাত দখল করে তার বাবার নামে পাঠাগার করেছে। এর পিছনেই মর্গ্যান স্কুল। অনেক মানুষ অনুরোধ করার পরও সেই স্কুলটি কিন্তু ভেঙ্গে দিয়েছে। এর বিরুদ্ধে ছোট ছোট বাচ্চারা কিন্তু প্লাকার্ড নিয়ে পথে নেমেছিলো। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও মুসলিম রহমতউল্লাহ ইনিস্টিটিউট ভেঙে দিয়েছে। উনি কারো কথাই শুনেন না। উনি কি সবার থেকেও শক্তিশালী! আমার মনে হয় সমস্ত আইন গরীবদের বিরুদ্ধে। যার বড় উদাহরণই আইভী।

টুডে : আপনার কাছে আইভীর সব থেকে ভালো দিক কোনটি?
শাহ নিজাম : তার সাথে যোগাযোগ ছিলনা, রাজনৈতিক মতের অমিলের কারণে যেতামও না। যদিও অনেক সময় তার কাছে যেতে বলা হয়েছিলো কিন্তু আমি মনে করি যার সাথে মনের মিল নেই তার না যাওয়াই ভালো।

টুডে : রাজনীতিতে শ্রমিক নেতা পলাশ কতটা পরিপক্ব বলে মনে করেন?
শাহ নিজাম : মূল রাজনীতি নয়, শ্রমিক রাজনীতির জন্য সে পরিপক্ব। আমার মত পলাশের রাজনৈতিক শিক্ষা গুরুও শামীম ওসমান। একটা সময় পলাশ আমার কাছে আসতো, বসতো। তখন দেখতাম সে রাজনীতিতে ভিন্নতা খোঁজার চেষ্টা করতো। একটা ক্ষেত্র তৈরি করে নিজের প্রতি আকৃষ্ট করার চেষ্টা ওর ছিলো। সে আমার বন্ধু মানুষ। নামাজ পড়ে, দাড়ি রেখেছে, টুপি পরে। কোরআন ও সুন্নাহ আলোকে সে যদি জীবন যাপন করে, আমার মনে হয় তার ছোট ছোট ভুলগুলো সে শোধরে নিতে পারবে।

টুডে : পলাশ দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন, পায়নি, কখনো যদি তিনি পেয়েই যান তাহলে আপনাদের ভূমিকা কী হবে?
শাহ নিজাম :  মনোনয়ন চাওয়াটা ওর অভ্যাস। ১৫ বছর ধরে চাচ্ছে। এ পর্যন্ত তিনবার চেয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের মানুষ এ ব্যাপারটা কীভাবে দেখে। তাছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি তাকে মূল্যায়ন করেন তবে, আমরাও করবো। আমার মনে হয় না দল এতটা দেউলিয়া হয়ে গেছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এতটা দেউলিয়া হয়নি।

টুডে : শামীম ঠেকাও- এমন সিদ্ধান্তে অনেকেই এক হয়েছে, কেন তারা শামীম ওসমানকে ঠেকাতে তৎপর?
শাহ নিজাম :  এটা সম্পূর্ণ ইর্ষান্বিত। প্রধানমন্ত্রী শামীম ওসমানকে ভালোবাসেন। এটাই প্রকৃতির নিয়ম যে, যখন মানুষ কাউকে বেশি ভালোবাসে তখন একটা শ্রেণি তার পিছনে লাগে। শামীম ওসমানের রাজনৈতিক দক্ষতা, নীতি আদর্শ আর ভালোবাসায় হাজারও নেতাকর্মী জীবন দিতেও প্রস্তুত। এমনটি নারায়ণগঞ্জে আর কোনো নেতার পক্ষে সম্ভব নয়। আজকে শামীম ওসমানের সাথে অনেকেই অনেককে তুলনা করেন। এটা ঠিক না। শামীম ওসমানের পারিবারিক ঐতিহ্য আছে। আজকে হয়তো অনেকেই এমপিগিরি করছেন। কিন্তু কোনো ভাবেই শামীম ওসমানের সমকক্ষ তারা নন। অনেকেই আজকে নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাসের জনপদ হিসেবে উল্লেখ করেন। অথচ এই নারায়ণগঞ্জ ঐতিহাসিক। নিজের জন্মস্থানকে ছোট করে কথা বলা ঠিক নয। শামীম ওসমান এমনটি কখনোই করেন না। তিনি এই জেলার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে কাজ করছেন। এটা একটা পক্ষ চায় না। একটা পক্ষ চায় না নারায়ণগঞ্জ নিয়ে মানুষ গর্ব করুক। আর তারাই চায় শামীম ওসমানকে ঠেকাতে।

টুডে : শামীম ওসমানকে গডফাদার বলা হয় কেন?
শাহ নিজাম :  শামীম ওসমানকে গডফাদার কেন বলবে না! ১‘শ বার বলবে। কারণ, তিনি ৩০ লক্ষ মানুষের সাথে বেঈমানি করেনি। যারা এই দেশের স্বাধীনতা চায়নি, সেই গোলাম আযমের  নারায়ণগঞ্জ প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিলেন, নারায়ণগঞ্জবাসীর লজ্জা টানাবাজার পতিতা পল্লী উচ্ছেদ করে এই জেলাকে কলঙ্কমুক্ত করেছিলেন শামীম ওসমান। এর ফলে মিডিয়ার গডফাদারদের আয় বন্ধ হয়ে যায়। তারা এনজিওর মাধ্যমে ওই পতিতা পল্লীর নামে কোটি কোটি টাকা নিয়ে আসতো। তাই তারা ক্ষুব্ধ হয়েই পত্রিকার মাধ্যমে শামীম ওসমানকে ‘গডফাদার’ লিখে দেশব্যাপী প্রচার করছে। কিন্তু শামীম ওসমান গডফাদার, এই কথাটা সত্য নয়।

টুডে : মেয়র আইভী আপনাকে ‘বিশিষ্ট সন্ত্রাসী’ অখ্যায়িত করে বক্তব্য রেখেছিলেন, আপনার দলের লোক, তারপরও এমন বক্তব্য কেন?
শাহ নিজাম :  বাজেট অনুষ্ঠানে তিনি বাজেট নিয়ে কথা বলবেন। কিন্তু তিনটি চ্যানেলে দেখলাম, তিনি আমাকে ‘বিশিষ্ট সন্ত্রাসী’ হিসেবে বক্তব্য দিয়েছেন! এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আমি সন্ত্রাসী কিনা, তা প্রশাসন দেখবে। আমি ৩৫ বছর রাজনীতির জীবনে এমন কোনো ঘটনার সাথে আমি জড়িত নই যে, আমাকে কেউ সন্ত্রাসী বলার সুযোগ পাবে। আমি কখনো জুট সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, জমি দখল করিনি। ৯৬ সাল থেকেই আমি গার্মেন্ট ব্যবসা করে কষ্ট করে রোজগার করেছি। তারপরও তিনি (আইভী) কেন আমাকে সন্ত্রাসী বলেছেন সেটি আমি জানি না।

টুডে : ফতুল্লা থানার ১০ নম্বর তালিকাভূক্ত সন্ত্রাসী মীর হোসেন মীরু এবং ১৯ মামলার আসামী মোফাজ্জল হোসেন চুন্নুকে আপনি শেল্টার দেন, এমন প্রশ্ন প্রায় উঠে, এর সত্যতা কতটুকু?
শাহ নিজাম :  মীরু এবং চুন্নু- এই দুইটা ব্যাপারই ভিন্ন। মিছিলে অনেক লোক আসে। সবাইকে ভালো ভাবে চিনি না। অনেকেই ছবি তুলে। পরে সেসব ছবি দিয়ে তার আমাদের লোক পরিচয় দেয়। আমাদের দলে কোনো সন্ত্রাসীর স্থান হবে না। আর মীরু একজন ভিকটিম। পলাশের নেতৃত্বে তাকে গুলি করা হয়েছিলো। সে একজন ফুটবলার ছিলো। আজ সে পঙ্গু। আজও সে তার বিচার পায়নি। সন্ত্রাসীদের আক্রমনে যে পা হারিয়েছে অথচ তাকেই সন্ত্রাসী বলা হচ্ছে! মিডিয়ার কাছে আমার প্রশ্ন- আসল সন্ত্রাসী কে?

টুডে : নতুন যারা রাজনীতিতে আসতে আগ্রহী তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কি থাকবে?
শাহ নিজাম :  অবশ্যই মনযোগ দিয়ে পড়াশোনা। যারা আসে তাদেরকে সরাসরি বলি, তোমাদের মূল রাজনীতিই হচ্ছে, তোমাদেরকে আগে ভালো রেজাল্ট করতে হবে, ভালো মানুষ হতে হবে। যদি দলকে ভালোবাসো, যদি শেখ হাসিনাকে ভালোবাস তবে, মন দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। তাহলেই তুমি দেশের জন্য কিছু করতে পারবে।

টুডে : আপনি যদি কখনো সুযোগ পান তাহলে সবার আগে কোন কাজটি করতে চান?
শাহ নিজাম :  ভালো কাজ করতে চাই। ভালো কাজ করার জন্য সুযোগ লাগে না। দরকার হয় ভালো মানসিকতার। সমাজ থেকে মাদক, সন্ত্রাস নির্মূল করার পাশাপাশি মানুষকে সচেতন করতে চাই।

টুডে : আমাদেরকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
শাহ্ নিজাম : আপনাদেরকেও ধন্যবাদ। নারায়ণগঞ্জ টুডে’র পাঠকের জন্য ভালোবাসা।

২৯ জুলাই, ২০১৯/এসপি/এনটি

উপরে