নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে মামলা ও গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে। সম্প্রতি জেলার সাতটি থানায় দলটির নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এরপরও দলটির নেতাকর্মীরা আগামী দশ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে নারায়ণগঞ্জের উপরই সবচে বেশি প্রত্যাশা করছে কেন্দ্র। বিষয়টি আগেই এই জেলার নেতাকর্মীদেরকে জানিয়েও দেয়া হয়েছে। সে মোতাবেক এষানকার নেতাকর্মীরা প্রস্তুতিও নিচ্ছিল। তবে হঠাৎ করেই জেলার সব কটি থানাতে দলীয় নেতাকর্মীদের নামে মামলা দায়েরের ঘটনায় প্রস্তুতিতে কিছুটা ছন্দপতন চলে আসে।
দলটির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্বে দেওয়া অনেক নেতাকর্মীই গ্রেফতার এড়াতে বাড়িঘর ছাড়া। পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা। তারপরও প্রস্তুতি থেমে নেই। যার যার অবস্থান থেকে ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে। তারা জানিয়েছেন, যে কোনো মূল্যে দশ তারিখের গণসমাবেশে নারায়ণগঞ্জ থেকে অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে লোকজন যাবে ঢাকায়।
এদিকে সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনকে আহ্বায়ক করার পর দীর্ঘ ঝিমুনি শেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপিতে প্রাণের সঞ্চার এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন অনেক নেতাকর্মীরা। তারা জানিয়েছেন, গিয়াসউদ্দিনের দিক নির্দেশনায় জেলা বিএনপি ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করে চলেছে। প্রতিটি থানা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায় থেকে ব্যাপক লোকজন ঢাকার সমাবেশে যোগদান করবে। ইতোমধ্যে জেলা বিএনপি ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে বেশ কয়েকটি প্রস্তুতি সভাও করেছে।
এয়াড়াও সমাবেশে যোগ দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন বহিস্কাকৃত বিএনপি নেতা তৈমূর আলম খন্দকার। তিনি ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি সভাও করেছেন। তৈমূর বলয় থেকেও বেশ কিছু লোকজন ঢাকার সমাবেশে যোগ দিবেন বলে জানা গেছে।
তবে আগামী সমাবেশে যোগদানের লক্ষ্যে যে কটি প্রস্তুতি সভা জেলা বিএনপির করেছে তার একটিতেও যোগ দেননি মামুন মাহমুদসহ নজরুল ইসলাম আজাদ অনুগামীরা। শোনা যাচ্ছে, সমাবেশে তারা জেলা বিএনপির মূল ব্যানারের বাইরে গিয়ে পৃথক ব্যানারে সমাবেশে যোগদান করবেন।
ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপিও ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। দলটির আহ্বায়ক অ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন ও সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নেতৃত্বে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি প্রস্তুতি সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাদের পাশাপাশি বিদ্রোহী গ্রুপ হিসেবে পরিচিত আতাউর রহমান মকুল, জাকির খান, আবুল কাউসার আশার পক্ষ থেকেও ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, দশ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ থেকে কম করে হলেও সত্তর আশি হাজার লোক ঢাকার সমাবেশে যোগদান করবে। সেভাবেই তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের দাবি, সমাবেশকে ঘিরে যানবাহন বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। নানাভাবে প্রতিবন্ধকতাও সৃষ্টি করা হতে পারে। তারপরও তাদের ঢাকায় যাওয়া রোধ করতে পারবে না। সেদিন গণজোয়ার সৃষ্টি করে প্রয়োজনে পায়ে হেঁটে হলেও তারা ঢাকায় পৌঁছাবেন বলে জানান নেতাকর্মীরা।
আপনার মতামত লিখুন :