NarayanganjToday

শিরোনাম

জামিন পেলেও বাড়ি ফেরা হলো না তাদের


জামিন পেলেও বাড়ি ফেরা হলো না তাদের

মামলার কারণে অনেকদিন ঘরছাড়া। উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন নিয়ে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু জামিন পেয়ে আদালত চত্বর ছাড়ার আগেই খবর পেলেন, আরও একটি মামলার আসামি হয়েছে ছাত্রদল নেতা জুয়েল রানা!

এবারের অভিযোগ ৩০ নভেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের মৌচাক এলাকায় বিএনপির ৫০/৫৫ নেতাকর্মী লাঠিসোটা, হকিস্টিকসহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নাশকতার উদ্দেশ্যে মহাসড়ক অবরোধ করে মিছিল করে ও স্লোগান দেয়। এসময় তারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। মিছিল থেকে ৩/৪টি গাড়ি ভাংচুর করা হয় এবং এসময় ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হলে তারা দৌড়ে পালিয়ে যায়।

জুয়েল রানা বলেন, এমন ঘটনা ঘটেছে শুনেছি। কিন্তু আমি বা আমাদের দলের কোনো নেতাকর্মী এদিন কোনো মিছিল করেনি। এটাই সত্য। সরকারি দলের লোকজন আমাদেরকে ফাঁসানোর জন্য নিজেদের লোক দিয়ে মিছিলের নাটক করিয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক।

৩০ নভেম্বর রাতেই জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন অভিযোগ করে বলেছেন, ‘তাদের কোনো নেতাকর্মী মিছিল বা মিটিং করেনি। নারায়ণগঞ্জে মহল আছে। যাদের কাজই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। বিভিন্ন সময় হুমকি ধামকি দিয়ে প্যানিক সৃস্টি করা। এদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সারা দেশের মানুষই জানে। এটি এই মহলেরই কাজ। বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতেই এসব করানো হয়েছে।’

সূত্র জানিয়েছে, ২৭ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষেপের করার অভিযোগে বিএনপির ৩৯ জন নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সানোয়ার হোসেন। এই মামলায় বৃহস্পতিবার উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহর আগাম জামিন নেন আব্দুল হাই রাজু, এম এ হালিম জুয়েল, সাগর প্রধান, জুয়েল রানা, মাহবুব হোসেনসহ দলটির নেতাকর্মীরা।

তারা অভিযোগ করেন, “জামিন পাওয়ার পর বাড়ি ফিরবো। কিন্তু তার আগেই শুনি আমাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় নতুন করে আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত পনের বছর ধরেই এমন করে একের পর এক মামলা তাদের বিরুদ্ধে দেওয়া হয়েছে বলে তারা দাবি করেন। তাদের দাবি, ‘গায়েবী মামলায়’ স্বৈরাচার এরশাদকেও হার মানিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। এই নির্যাতনের শেষ একদিন হবেই। সেদিন আর বেশি দূর নয়। ভোরের সূর্য ফুটবেই।”

সূত্র মতে, ৩০ নভেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জে মৌচাক এলাকায় মশাল মিছিল ও ককটেল বিস্ফোর এবং গাড়ি ভাঙচুর করার অভিযোগ এনে সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপি, জামায়তে ইসলামী ও গণঅধিকার পরিষদের ২১ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩৫ জনকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ। ১ ডিসেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক দেবাশিষ কুন্ডু বাদী হয়ে বিস্ফোরক আইনে এ মামলা দায়ের করেন।
 
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান।  

মামলার আসামিরা হলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর আব্দুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুল্লাহ, গণঅধিকার পরিষদের জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফ ভুঁইয়া, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল হাই রাজু, মহানগর ছাত্রদলের সহ সভাপতি জুয়েল রানা, থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম, জেলা জামায়াতে ইসলামীর সদস্য জয়নাল আবেদীন ফারুক, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য পলাশ, ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রওশন আলী, সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন, যুগ্ম আহ্বায়ক মাজহারুল হক ময়ুর, ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলজার হোসেন, মহানগর বিএনপি নেতা আনিস, বিএনপি নেতা জাকির, থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইকবাল হোসেন, থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি জয়নাল, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রাজা মিয়া, থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মুক্তার হোসেন, যুবদল নেতা মাসুম গাজী, বিএনপি নেতা আফজাল হোসেনসহ অজ্ঞাত ৩৫ জন।

উপরে