NarayanganjToday

শিরোনাম

মেয়র আইভী ‘ফ্যাক্ট’ সুযোগে আছেন পলাশ


মেয়র আইভী ‘ফ্যাক্ট’ সুযোগে আছেন পলাশ

হাতে আর বেশি সময় নেই। ঈদের পরই শুরু হবে একাদশ নির্বাচনের তোড়জোড়। যদিও নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে একাদশ নির্বাচনী ঢামাডোল আগের থেকেই বাজতে শুরু করেছে। তবে ফাইনাল হুইসালের জন্য ঈদের অপেক্ষা মাত্র। অর্থাৎ এবারের ঈদের কিছুদিনের মধ্যেই বোঝা যাবে বা জানা যাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী কারা হচ্ছেন?

তবে এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের ক্ষেত্রে মেয়র আইভীর সমর্থন ‘ফ্যাক্টর’ হয়ে ওঠতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অনেকেই বলছেন, একাদশ নির্বাচনে মেয়র আইভীর সমর্থন পাওয়া মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কেন্দ্র থেকে বিশেষ বিবেচনায় রাখা হতে পারে।

সূত্রের মতে, নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে আইভীর মতামত বেশ গুরুত্বের সাথেই নিবে আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ ৪ ও ৫ আসনের ক্ষেত্রে। এই দু’টি আসনে আইভীর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। ফলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চাইছে অন্তত এই দু’টি আসনে মেয়র আইভীর ইমেজকে কাজা লাগিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার করতে।

এদিকে নির্বাচনকালিন সময়ে মেয়র আইভীর সমর্থনকে যদি প্রাধান্য দেয়া হয় তবে, বিপাকে পড়তে পারেন নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী দুই সহদোর সাংসদ সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমান, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বোদ্ধারা। কেননা, এই দুই সাংসদের সাথে মেয়রের সম্পর্ক মোটেও ভালো না। ফলে ধারণা করা হচ্ছে নির্বাচনের ক্ষেত্রে তাঁদেরকে কখনোই সমর্থন দিবেন না তিনি।

অপরদিকে আগামী নির্বাচনে আইভীর সমর্থন মনোনয়ন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সহায়ক হবে, এমন ভাবনা থেকে ইতিমধ্যে জেলার অনেক মনোনয়ন প্রত্যাশীই মেয়র আইভীর সাথে নিজেদের সম্পর্কটা একটু ঝালিয়েও নিচ্ছেন। এই তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত। এছাড়াও এই তালিকায় রয়েছেন গোলাম দস্তগীর গাজী, কাউছার আহম্মেদ পলাশ, আরজু ভূঁইয়াসহ কয়েকজন।

এদিকে একটি সূত্র বলছে, এবারের নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ (সিদ্ধিরগঞ্জ-ফতুল্লা)-৪ আসনে মেয়র আইভীর সমর্থন এবং কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতার আশীর্বাদকে কাজে লাগিয়ে মনোনয়ন বাগিয়ে নিতে মুখিয়ে আছেন পলাশ। ধারণা করা হচ্ছে মেয়র আইভীর পক্ষ থেকে পলাশের জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে। তাই অনেকে ধরেই নিচ্ছেন আগামী নির্বাচনে এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের ক্ষেত্রে পলাশের অবস্থান অনেকটাই সুদৃঢ়।

তবে এ আসনে অত্যন্ত শক্তিশালী অবস্থানে এখনও পর্যন্ত আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। এবারের নির্বাচনে তিনিও মনোনয়ন প্রত্যাশী। আর তাঁর অনুসারিরা শতভাগ নিশ্চিত তিনিই পাবেন মনোনয়ন। তাই পলাশকে তাঁরা পাত্তাই দিতে চাচ্ছে না। যদিও রাজনৈতিক বোদ্ধারা বলছেন, শামীম অনুসারিদের এমন দাম্ভিকতা মোটেও ঠিক নয়। কেননা, রাজনীতির গণেশ যে কোনো সময় উল্টে যায়। এবারের নির্বাচনে পলাশ যদি মনোনয়ন পেয়েই যান তবে, সেটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। বরং স্বাভাবিকই হবে। কেননা, পলাশের অবস্থানও ফেলে দেয়ার মতো নয়।

অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ (সোনারগাঁ)-৩ আসন থেকে এবারের মনোনয়ন পেতে আটঘাট বেঁধেই মাঠে নেমেছেন সাবেক সংসদ সদস্য কায়সার হাসনাত। যদিও ওখানে শামীম ওসমান সমর্থিত আবু জাফর চৌধুরী বীরু রয়েছেন। তাই মেয়র আইভীর সমর্থন কাজে লাগাতে কায়সার এসে যুক্ত হয়েছেন আইভীর দিকে। আগামী নির্বাচনে তিনি মেয়রের সমর্থনকে কাজে লাগাতে চাইছেন।

এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ (রূপগঞ্জ)-১ আসনে ওসমান পরিবার প্রত্যক্ষভাবে না হলেও পরোক্ষভাবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে কায়েতপাড়ার চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকে। পাশাপাশি আনভীরও ওসমান পরিবারের সমর্থনে আছেন। মোদ্দা কথা ওসমান পরিবার গাজী বিরোধী। ফলে গাজীর অবস্থান মেয়র আইভীর পক্ষে। তিনিও এই নির্বাচনে মেয়রকে কাছে পাচ্ছেন।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ (বন্দর-সদর)-৫ আসনে বর্তমানে আছে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। তিনি আগামীতেও নির্বাচন করবেন। যদিও এখনও এ নিয়ে সরাসরি কিছুই বলেননি এই সাংসদ। তবে জানিয়েছেন জুনে তিনি জানাবেন কি করবেন কোন দল থেকে নির্বাচন করবেন। তবে এবার আওয়ামী লীগ একাট্টা হয়েছে জাপা বিরোধী মনোভাব নিয়ে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে শামীম ওসমান স্থানীয় আওয়ামী লীগের সমর্থন পাচ্ছেন না। আর মেয়রের সমর্থন পাবেন বলেও কেউ মনে করছেন না। আর এই সুযোগটাকে কাজে লাগাতে চান আরজু ভূঁইয়া।

তবে শেষ পর্যন্ত কি হবে সেটিই এখন দেখার বিষয়। আর সেটি দেখার জন্য অন্তত আরও কয়েকটা মাস অপেক্ষা করতে হবে। ফলে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে এটুকু নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, মেয়র আইভীর সমর্থন এবারের নির্বাচনে ব্যাপক সহায়ক হবে।

১৩ জুন, ২০১৮/এসপি/এনটি

উপরে