NarayanganjToday

শিরোনাম

পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে এবার শামীম ওসমানের সরাসরি অবস্থান!


পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে এবার শামীম ওসমানের সরাসরি অবস্থান!

এবার সরাসরিই প্রশাসনের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান জানান দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাংসদ শামীম ওসমান। শনিবারের কর্মী সভাতে তার এবং অনুসারিদের বক্তব্যের পুরোটাজুড়েই ছিলো নারায়ণগঞ্জ পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে ‘হুমিক’ স্বরূপ। বিশেষ করে তাদের বক্তব্যে যে ক্ষোভ প্রতিফলিত হয়েছে তা মূলত জেলা পুলিশ সুপারকে কেন্দ্র করেই।

এর আগে জেলা পুলিশ সুপারের হার্ডললাইনে থাকার বিষয়টি সর্বত্রই ছিলো আলোচনার তুঙ্গে। তবে, প্রশাসনের এমন হার্ডলাইনে থাকায় বেশ ভালো করেই বেকায়দায় পড়েছিলেন শামীম ওসমান অনুসারি নেতাকর্মীরা। যা শনিবার তার বক্তব্যে সেসব বিষয়গুলো উঠে আসে।

তবে, সাংসদ শামীম ওসমানের বক্তব্যে ফতুল্লা থানা পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী মীর হোসেন মীরুর কথা উঠে আসাতে অনেকেই হতবিহব্বল হয়েছেন। ৪টি হত্যাসহ একজন ১৯ মামলার আসামীকে গ্রেফতার করাতে সাংসদের ক্ষোভ প্রকাশ করাটা কতটা যৌক্তিক সে প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে। একই সাথে কেউ কেউ বলছেন, তার অনুসারি হলেই কী তাকে গ্রেফতার করা যাবে না? তাদের জন্য কী সাদ খুন মাফ?

এছাড়াও নাম উল্লেখ না করে রীতিমত নারায়ণগঞ্জ পুলিশ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি হারুন অর রশীদকে এক রকম হুমকি দিয়েই বলা হয়েছে, ‘এটা গাজীপুর নয়, নারায়ণগঞ্জ, ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে টের পাবেন। প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জের সব খবর রাখেন।’ তাহলে কী নারায়ণগঞ্জ পুলিশ প্রশাসন এতদিন সাংসদ এবং তার অনুসারিদের তোষামদ করেই চলছিলো যে কারণে এই পুলিশ সুপার সেটি করেনি বলেই বিরাগভাজন হচ্ছেন!

তবে সে যাহোক, সব মিলিয়ে নারায়ণগঞ্জের বর্তমান পরিস্থিতিতে যে আগুন জ্বলছিলো তাতে শনিবারের সভাতে ঘি ঢেলেই দিয়েছেন সাংসদ শামীম ওসমান বক্তব্যের মাধ্যমে। এতে করে অনুসারিদের মধ্যে আরও যারা মীরু মতো রয়েছেন তারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে বেশি করে উৎসাহিত হবেন বলেই মনে করছেন অনেকে।

সূত্র বলছে, সাংসদ শামীম ওসমান তার বক্তব্যে পুলিশকে পোশাকধারী সন্ত্রাসী হিসেবেই সরাসরি আখ্যায়িত করেছেন। তিনি সোজাসুজি ভাবেই বলে দিয়েছেন, ‘কোনো পোশাকধারী সন্ত্রাসীর স্থান হবে না নারায়ণগঞ্জে।’

গত ১ এপ্রিল মধ্যরাতে ফতুল্লার পাগলায় ভাসমান রেস্তোরাঁ মেরি অ্যান্ডারসনে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ মদ-বিয়ার। ওই ঘটনায় শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহমেদ টিটুকে জড়িয়ে মামলা করে পুলিশ। স্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠন ও জেলা ক্রীড়া সংস্থা ওই ঘটনায় টিটুর পক্ষে অবস্থান নেয়।

এরমধ্যে শুক্রবার জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটাররা টিটুকে মদ ব্যবসায়ীর সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত করার প্রতিবাদে যৌথ বিবৃতি দেন। এসব নানা ঘটনা নিয়ে পুলিশ ও নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ এবং ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো এখন মুখোমুখি অবস্থান করছে।

এদিনের কর্মিসভায় আসা সদর, ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ ও সোনারগাঁয়ের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বেশ উত্তেজিত অবস্থায় ছিলেন। তারা পুলিশের এ ধরনের আচরণের প্রতিবাদে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। এবং পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদকে ‘ঘুষখোর’ আখ্যায়িত করে তার প্রত্যাহার দাবি করেন। তা না হলে তারা একযোগে পদত্যাগের হুঁশিয়ারি দেন।

তখন শামীম ওসমান উত্তেজিত নেতাকর্মীদের শান্ত করতে নিজেই মাইক হাতে নিয়ে বলেন, আমরা কি দুর্বল যে, পদত্যাগ করতে হবে। প্রয়োজন হলে আমি একাই পদত্যাগ করব। আপনাদের করতে হবে না।

শামীম ওসমান নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আরও বলেন, পোশাকধারী একটি বাহিনী নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীদের চায়ের দাওয়াত দিয়ে ডেকে নিয়ে চাঁদাবাজি করছে। তিনি কোনো ব্যবসায়ীকে এক টাকাও চাঁদা না দিতে আহ্বান জানান। এ সময় তিনি স্লোগান দেন- দেখা করার দিন শেষ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ।

৭ এপ্রিল, ২০১৯/এসপি/এনটি

উপরে