NarayanganjToday

শিরোনাম

মেয়র যা পারেনি এসপি তা পেরেছে, প্রশ্ন উঠেছে ক’দিন থাকবে?


মেয়র যা পারেনি এসপি তা পেরেছে, প্রশ্ন উঠেছে ক’দিন থাকবে?

হকারশূন্য নারায়ণগঞ্জ শহর এ যেন স্বপ্নে মতই। তবে, এমনটাই তো চেয়েছিলো নগরবাসী। যার উদ্যোগ নিয়েছিলেন মেয়র আইভী। কিন্তু শেষতক তিনি আর পেরে উঠেননি হকার বান্ধব ক্ষমতাসীন দলের কারণে। যার ফলশ্রুতিতে তিনি তাদের হামলায় আহতও হয়েছিলেন।

তবে, হকারমুক্ত ফুটপাতের যে স্বপ্ন দেখেছিলেন নগরবাসী তার পুরণ করে দিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, হকারমুক্ত এমন সুন্দর ফাঁকা শহর কতদিন থাকবে?

সূত্র মতে, শহরের ব্যস্ততম বঙ্গবন্ধু সড়ক। এই সড়কের উভয় পাশই দীর্ঘদিন ধরে হকারদের কবলে। ক্ষমতাসীন আর পুলিশের ছত্রছায়া মানুষের হাঁটাচলা করার রাস্তাটুকু দখলে ছিলো হকারদের। যার কারণে ফুটপাত দিয়ে হাঁটা চলা করার মতো কোনো রকম অবস্থাই ছিলো না। তারপরও ভিড় ঠেলে চলতে গিয়ে নানা বিপত্তিতে পড়তে হতো নগরবাসীকে। একদিকে মেয়েরা হতো যৌনহয়রানির শিকার অন্যদিকে কারো না কারো পকেট ফাঁকা হয়ে যেত। এ দুর্বিষহ যন্ত্রণার মধ্য দিয়েই দীর্ঘদিন চলেছে নগরবাসী।

তবে, নগরবাসীর হকারমুক্ত ফুটপাতের আকাক্সক্ষা পুরণে মাঠে নেমেছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। তিনি নিজে সামনে থেকে হকার উচ্ছেদ শুরু করেন ২০১৭ সালের একদম শেষের দিকে। আর এ নিয়ে ক্ষিপ্র হয়ে উঠে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী সাংসদ শামীম ওসমান ও তার অনুসারিরা। ফলে একদিকে আইভী হকার উচ্ছেদ করলেও অন্যদিকে শামীম ওসমানের নির্দেশে তার অনুসারিরা হকার বসানোর জন্য মাঠে নামেন। আর এ কারণে উভয় পক্ষই চলে যায় মুখোমুখি অবস্থানে।

সূত্র মতে, তাদের এই পক্ষে বিপক্ষে থাকা নিয়ে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই বাড়তে থাকে। যা ১৬ জানুয়ারি হকার ইস্যু নিয়ে সৃষ্টি হয় সংঘর্ষ। যে সংঘর্ষে মেয়র আইভী হামলার শিকার হয়ে আহতও হয়েছিলেন। তবে, সেদিনের সেই ঘটনায় আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শনের যে কা- ঘটেছিলো তা নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন হলেও সে তদন্ত আজও শেষ হয়নি। বিচার হয়নি ওই ঘটনার। উপরন্ত ফুটপাত ফের হকারদের দখলে চলে যায়।

তবে, একটু দেরী হলেও নারায়ণগঞ্জ শহরের অন্যতম সমস্যা এই হকার উচ্ছেদে মাঠে নামে পুলিশ। আর সেটির নেতৃত্ব দেন পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ। ১৫ জুন পুলিশ সুপার নিজেই মাঠে নামেন হকার উচ্ছেদে। এদিন তিনি শহরের চাষাড়া থেকে শুরু করে নগর ভবন পর্যন্ত হকার উচ্ছেদ করেন। পরে তিনি চাষাড়া শহীদ মিনারে সাংবাদিকদের সাথে ব্রিফ করেন।

তিনি বলেছিলেন, ‘চাষাড়া থেকে নগর ভবন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সড়কের দুই পাশই থাকবে হকারমুক্ত। এবং যারা হকারদের বসাতে চান তারা অন্যত্র তাদের জন্য ব্যবস্থা করবেন।’ এরপর থেকে গত তিনদিন ধরে বঙ্গবন্ধু সড়ক এখন একেবারেই ফাঁকা। হকার নেই। নগরবাসী ফাঁকা ফুটপাতে হাঁটছেন নিজেদের মতো করেই।

তবে, নগরবাসীর মনে শঙ্কা আবারও এসব ফুটপাত হকারদের দখলে চলে যাবে। কেননা, ক্ষমতাসীনদের একটি পক্ষের স্বার্থ জড়িত এই ফুটপাতে। হকার নেতা রহিম মুন্সির মাধ্যমে যে চাঁদা উঠে প্রতিদিন তার ভাগবাটোয়ারা পেয়ে থাকেন তারা। যার কারণে এই পক্ষটি কোনো ভাবেই চায় না হকারমুক্ত ফুটপাত। এ কারণে তারাই ১৬ জানুয়ারি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিলো।

এদিকে নগরবাসী বলছেন, এমন ফুটপাত থাকুক। যানজট কমবে। জনজটও থাকবে না। স্বস্তিতে হাঁটাচলা করা যাবে। পুলিশ সুপার যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা যেন সবসময়ই থাকে। এ জন্য আমরা নগরবাসীরা তার পাশে থাকবো।

১৮ জুন, ২০১৯/এসপি/এনটি

উপরে