NarayanganjToday

শিরোনাম

কর্মী বান্ধব শামীম ওসমানকে বিতর্কিত করছে গুটি কয়েকজন!


কর্মী বান্ধব শামীম ওসমানকে বিতর্কিত করছে গুটি কয়েকজন!

কর্মী বান্ধব শামীম ওসমান। তিনি কর্মীদের জন্য নিবেদিত প্রাণ। কিন্তু তিনি যাদের জন্য নিবেদিত সেই তাদের কেউ কেউ এই সাংসদকে বিতর্কিত করতে নানা ধরণের অপরাধমূলক, ঘৃণিত কাজ করেই চলেছে। এমন মন্তব্য শামীম ওসমান অনুসারি অনেকেরই।

সূত্র মতে, মাদক, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন আগেই জিহাদ ঘোষণা করেছিলেন সাংসদ শামীম ওসমান। তার কাছে, পাশে থাকা অনেকেই বলছেন, অতীতের শামীম ওসমান আর বর্তমানের শামীম ওসমানের মধ্যে যোজন যোজন পার্থক্য। এখনকার শামীম ওসমান মনে প্রাণে চান না, তার সাথে থেকে কেউ চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসা করুক। একই সাথে তিনি চান, তার নির্বাচনী এলাকা থেকে মাদক, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস নির্মূল করতে। এমন নির্দেশনাই তিনি দিয়েছেন তার অনুসারিদের।

তবে, অপ্রিয় হলেও সত্য, মাদক-সন্ত্রাস আর চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সাংসদ শামীম ওসমান যখন সোচ্চার হয়ে উঠলেন তখন তার অনুসারি কাউন্সিলর আব্দুল করীম বাবু ওরফে ডিস বাবু, শাহ জালাল বাদল এবং দুলাল প্রধানের বিতর্কিত কর্মকা- এই সাংসদকে বেশ বিতর্কে ফেলে দিয়েছে।

সূত্র বলছে, শহর ও শহরতলীজুড়ে আব্দুল করীম বাবু ওরফে ডিস বাবু সাংসদ শামীম ওসমানের একজন ঘনিষ্ঠ অনুসারি হিসেবেই পরিচিত। সাংসদের পরিচয়ে এবং তার আশীর্বাদেই এই ডিস বাবু নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। অথচ এই বাবুর বিরুদ্ধে অহরহ চাঁদাবাজির অভিযোগ। চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল তাকে বন্দরের একটি চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেফতারও করেছিলো ডিবি পুলিশ। এরপর একাধিক চাঁদাবাজির মামলাও হয় তার বিরুদ্ধে। যদিও বর্তমানে এই কাউন্সিলর সব ক’টি মামলায় জামিনে রয়েছেন। এমনকি এসব মামলা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলেও তিনি দাবি করেছিলেন।

অপরদিকে ৩১ জুলাই র‌্যাব-১১ ইসমাইল মিয়া নামে এক চাঁদাবাজকে সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক করে। তার বিরুদ্ধে একাধিক চাঁদাবাজির মামলা ইতোপূর্বেও ছিলো বলে জানিয়েছে র‌্যাব। তাকে কাউন্সিলর শাহ জালাল বাদলের বাড়ি থেকে আটক করা হয়। স্থানীয় সূত্র মতে, ইসমাইল মিয়া কাউন্সিলর শাহ জালাল বাদলের লোক হিসেবে পরিচিত। যদিও এ ব্যাপারে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য কাউন্সিলর বাদলের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ ১ আগস্ট ফেনসিডিলসহ আটক হয় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইফুদ্দীন আহম্মেদ দুলাল প্রধান। তার কাছ থেকে ৫০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। যদিও দুলাল প্রধানের আটকের পর অনেকই বিষয়টি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দাবি করে আসছিলেন। কিন্তু আটক দুলাল প্রধান নিজেই ফেনসিডিল ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন বলে ডিবিকে জানিয়েছেন। এমন দাবি করা হয়েছে জেলা পুলিশ থেকে। এরপরই বিষয়টি অন্যদিকে মোড় নেয়।

এদিকে শামীম ওসমান অনুসারী এবং শুভাকাঙ্ক্ষিদের অনেকেই বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই সাংসদ শামীম ওসমানকে কোণঠাসা করার জন্য দলের ভেতরই একটা পক্ষ নানা ভাবে ষড়যন্ত্র করে চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে তার ঘনিষ্ঠজন পরিচয়ে এরা বিতর্কিত কর্মকা-ে জড়িয়ে যাওয়া মানে সাংসদ শামীম ওসমানকেই বিতর্কিত করা।

তাদের মতে, শামীম ওসমান কর্মী সমর্থকে বলিয়ান। তার অগণিত কর্মী রয়েছে। যারা এই সাংসদের ডাকে মুহূর্তের মধ্যেই ছুটে আসেন এবং একটি সমাবেশ ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই জনসমুদ্রের রূপ দিতে পারেন। যারা সাংসদের ডাকে ছুটে আসেন তাদের মধ্যে হাতে গোণা কয়েকজন সুবিধাভোগি হলেও অগণিত কর্মী সরাসরি কোনো সুবিধা গ্রহণ না করেও কেবল মাত্র সাংসদের প্রতি অনুরাগ থেকেই ছুটে আসেন। কিন্তু এদের মতো গুটি কয়েকজন বিতর্কিত ব্যক্তিদের কারণে দেশের সব থেকে প্রভাবশালী সাংসদ শামীম ওসমানকে নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পান অনেকে। তাই সাংসদের উচিৎ, তার আশপাশের থেকে বিতর্কিত ব্যক্তিদেরকে সরিয়ে দেওয়া এবং তাদের প্রশ্রয় না দেওয়া।

এই সূত্রটি আরও বলেন, কখনো কোনো কর্মী বিপদে পড়েছে কিংবা কোনো সমস্যায় আছেন জানলে সাংসদ নিজে স্বশরীরে উপস্থিত হতে না পারলেও তার ঘনিষ্ঠজনদেরকে নির্দেশ দেন এবং তিনি যেভাবে সম্ভব বিপদগ্রস্থ কর্মীর পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। অথচ তার মতো এমন কর্মী বান্ধব একজন নেতার দিকে তাকিয়েও গুটি কয়েকজন যারা বতর্কিত কর্মকা- করছেন তাদেরকে সতর্ক হওয়া উচিৎ এবং নিজেদেরকে সকল বিতর্ক থেকে দূরে সরিয়ে রাখা দরকার। অথচ হচ্ছে এর পুরো উল্টোটা। তাই সাংসদ শামীম ওসমানকেই এ ব্যাপারে সতর্ক হওয়া দরকার বলে মনে করছে সূত্রটি।

২ আগস্ট, ২০১৯/এসপি/এনটি

উপরে